একবিংশ শতাব্দীর সবচেতে গুরুত্বপূর্ণ সফট স্কিল (Soft Skill) হচ্ছে ইফেক্টিভ কমিউনিকেশন স্কিল (Effective Communication Skill)। অনলাইন এবং অফলাইনে আমাদের কথা-বার্তা পেশাদার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় হল এই বইটি।
★বই পেতে সরাসরি আমাদের পেইজে মেসেজ করুন অথবা কল করুন 01775871340 নাম্বারে।★
★ আপনার পছন্দের যেকোন বই খুঁজে পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন www.banglaboi.com.bd ★
আমি এমন একটা যুগে বড় হই যখন স্কুলে কিংবা বাসায় শাসনের নামে মৃদু প্রহারের প্রয়ােগ ছিল খুব স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। কিন্তু আমার স্কুল ছিল সেন্ট যােসেফ হাই স্কুল, একটা মিশনারি স্কুল । অনেক বছর ধরে বিদেশী হেড মাস্টারদের পরিচালনায় থাকায় অন্যান্য স্কুলের তুলনায় শারীরিক প্রহারের প্রয়ােগ ছিল খুব কম। আর আমিও ছিলাম শান্ত শিষ্ট (লেজবিশিষ্ট) তাই মার খেতে হয়নি কখনাে, বাসায় যদিও আমার বাবা মা বরাবরই খুবই কড়া প্রকৃতির ছিলেন, এই ব্যাপারটায় তারা ছিলেন অসম্ভব প্রগতিশীল এবং নমনীয়।
মােটকথা, যে যুগে বেড়ে ওঠা মানে জালি বেতের সাঁড়াশি অভিযানে পুরাে প্রজন্ম তটস্থ, সেই যুগে প্রহার ব্যতিরেকেই আমার শৈশবের বেড়ে ওঠা।
আমি যখন কলেজে পড়তাম তখন হােস্টেলে থাকতাম। শুধু তাই নয়, গণরুমে থাকতাম। যারা সরকারি স্কুল কলেজের হােস্টেলে থেকেছেন অথবা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থেকেছেন তারা জানেন গণরুম কী? যারা জানেন না তারা এই উপন্যাসের প্রথম পর্বেই জেনে যাবেন। হােস্টেলে থাকাকালীন দুই বছরই আমি গণরুমে থেকেছি। আমি ভীষণ মিশুক হওয়ার কারণে শত শত মেয়ের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে, খাতির হয়েছে। আমি প্রায় সকলেরই কথা রাখার বাক্স ছিলাম, শ্রোতা হিসেবে আমি উচ্চ পর্যায়ের। একজনের কথা আরেকজনকে বলতাম না বলেই হয়তাে আমি তাদের নির্ভরতার জায়গাটা অর্জন করতে পেরেছিলাম। এরা সকলেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছে। একেকটি মেয়ের জীবন, পরিবার, মানসিকতা ছিল একেক রকম।
একেকজনের গল্প শুনতাম আর অবাক হয়ে ভাবতাম, পৃথিবীতে আমাদের ভাবনার বাইরে এতকিছু ঘটে যায়? এর মধ্যে গুটিকয়েক মেয়ের জীবনের ঘটনা এবং তাদের চিন্তা-ভাবনা আমাকে রীতিমতাে ব্যথিত করে তুলত। দিন যত যেতে লাগলাে আর আমি বড় হতে লাগলাম, আরাে বেশিসংখ্যক এ ধরণের মেয়েদের সাথে পরিচিত হতে লাগলাম। এর মধ্যেই আমি লেখালেখি শুরু করেছি। তখন ভাবলাম আমার এদেরকে নিয়ে কিছু লিখতেই হবে। আমি কী ধরনের মেয়েদের কথা বলছি তা এখানে বিস্তারিত লিখতে পারছি না, আপনারা উপন্যাসটি পড়লেই বুঝতে পারবেন। বলা যায় মহাযাত্রা আমার ড্রিম প্রজেক্ট।
আমার যত লেখা রয়েছে তার মধ্যে এই উপন্যাসটি লিখতে আমার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়েছে। একটি উপন্যাস লিখতে লিখতে সেই উপন্যাসের চরিত্রগুলাে লেখকের পরিবারের সদস্যদের মত হয়ে যায়। তাই তাদের আনন্দে লেখক আনন্দ পায়, তাদের কষ্টে কষ্ট পায়। উপন্যাসটি পড়ে একটি মেয়েও যদি কোনাে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে তবে আমার এত কষ্ট করে এত বড় উপন্যাস লেখা সার্থক হবে। মহাযাত্রায় মূল চরিত্রের নাম প্রাণাে। প্রাণাের জন্মদিনের দিন তার জীবনে একটি বিশেষ ঘটনা ঘটে। রূপক অর্থে ধরা যায়, সেদিন তার নতুন করে জন্ম হয়েছে। আগের প্রাণাের সাথে এই প্রাণের কোনাে মিল নেই। আমি চাই মেয়েরা নতুন প্রাণাের মত আত্মবিশ্বাসী, আত্মসম্মানবােধ সম্পন্ন, পরিশ্রমী এবং স্বপ্নবাজ হয়ে উঠুক।