Sale!

নিরুদ্দেশ যাত্রা

৳ 450.00

একদিন ভোরবেলায় যখন সজীবের নিরুদ্দেশ যাত্রা শুরু হয়, তখন দিন তারিখের হিসেবে পাঠকের বয়স বছর দুয়েক, মানে প্রায় টুনির সমান। কিন্তু কয়েক বাক্য পার হতেই হঠাৎ করেই সে হয়ে যায় সজীবের সমবয়সী, নিজেকে মনে হয় সোমা। কড়ি বর্গা ওয়ালা বাড়ি, বাগান, পুকুরঘাট, মানিকগঞ্জ শহর, স্কুল, বন্ধুরা সব কিছুতেই যেন ভাগ বসাতে মন চায়। সজীবের মতো তারো ছেলে বেলা ফেলে, মা বাবা ছেড়ে আসার সত্যিকারের গল্প থাকার কারনে এত মিল খুঁজে পাওয়া যায়, যে সজীবের জন্যই শেষতক মায়া পড়ে যায়।

এই মায়ায় মায়ায় পড়া এগোতে থাকে, যদিও একটা সময় কিছু কিছু জায়গায় ডায়লগ গুলো ভালো লাগবে না, মনে হবে খুব ক্লিশে। কোথাও মনে হবে, উহ! বেশি বেশি! কোথাও মনে হবে, এক পাতায় যা বলা যেত, তা বলতে তিন পাতা খরচ হয়ে গেছে। বিভূতির আদর্শ হিন্দু হোটেল পড়তে গিয়ে, শেষে গিয়ে যেমন মনে হয়েছে, এত ভালো নিয়ে তো মানুষের জীবন হয় না। নিরুদ্দেশ যাত্রার প্রথম অর্ধে সেরকম মনে হয়েছে, পরিবারটার ভেতর কোন অনুযোগ নাই, কারো সাথে কারো মতানৈক্য নাই, বেদনা নাই। মোট কথা কোন হোঁচট নাই। এত সরল গল্প কি মানুষের জীবনে থাকে নাকি! তারপরও পড়া বাদ দেয়া যাবে না। চলার পথে, কাজের ফাঁকে মন পড়ে থাকবে নিরুদ্দেশ যাত্রায় । মনে হবে, কখন পড়ি, কখন পড়ি। তার মানে বইটা, গল্পটা পাঠককে আটকে রাখবে।

তুলনামূলক শেষার্ধ টান টান উত্তেজনার। অনেকগুলো গল্পের দেখা পাওয়া যায় শেষে এসে, গতিময় সব গল্প। তার সংগে সংগে জীবন দেখার নানা দর্শন। মামুনের চরিত্রটার সাথে আশেপাশের মানুষগুলোকে মিলিয়ে দেখতে ইচ্ছা করে এমন পরিস্থিতিতে কে কেমন আচরন করতো। শুরুতে যে সজীবের প্রতি টান ছিল হাত ধরে দেখার মতো, শেষে এসে সেটাই বদলে যায় সহমর্মিতায়। মনে হয় ইস একটু সহনশীল আচরন যদি পেত ছেলেটা। সজীবদের সাথে বড় হতে হতে পাঠক নিজেকেও খুঁজে পায় জীবনের শেষের পথে। বুঝে যায়, জীবনটা সবারই এভাবে অপচয় হয়ে যায়। আবার সোমার সাথে সজীবের হঠাৎ দেখা আশা জাগায়, অনেক না পাওয়ার ভেতরও, নিশ্চয়ই কিছু না কিছু পাওয়া হয়ে যায়, অকস্মাৎ। একদিন, তবে আমরাও…।

নিরুদ্দেশ যাত্রা করুণ ভাবে সেই কঠিন সত্যটাই সামনে নিয়ে আসে, যার ঠিকানা নেই, সে খোঁজে । আবার কত মানুষ ঠিকানা ছেড়ে দূরে চলে যায়, স্বেচ্ছায়। কত মানুষ একের পর এক ভুল করেও ভালো থাকে, আর কত মানুষ একটা ভুল মোচনের চাবি খুঁজে বেড়ায় সারাজীবন।

ISBN

9789849302292

Published

2018