নস্টালজিক মন বরাবরই ফিরে যায় স্মৃতির ধূসর পথে। আবছা আলোয় একে একে পুরোনো বইয়ের মতো পাতা উল্টে তুলে আনে মলাটবন্দি গল্প। শাহাদুজ্জামানের ‘খাকি চত্বরের খোয়ারি’ তেমনই এক বই। ক্যাডেট জীবনের নিয়মতন্ত্রের গল্পে লেখক ভবিষ্যতে দাঁড়িয়ে অতীতের নিজেকে আবিষ্কার করেছেন এ বইয়ে।
দেয়াল আর কাঁটাতার ঘেরা এক আধাসামরিক প্রতিষ্ঠান ক্যাডেট কলেজ। কতশত রোমাঞ্চের গল্প জন্ম নেয় স্বপ্নালু কিশোরদের জীবনে। কবিতার ভাষায় লেখক গল্প বলেছেন, কঠোর নজরদারির ভেতর প্যারেড করা, সোজা হয়ে ক্লাসরুমে বসা, বিকেলে মাঠে খেলাধুলা করা, গলায় টাই বেঁধে কাঁটা চামচে ডিনার করা কিশোরদের যারা ঘড়ির কাঁটা ধরে ঘুমুতে যায় আবার বিউগলের শব্দে জেগে ওঠে। কঠোর নিয়মের মধ্যেও আবার কারো কারো টেবিলে উঁকি দেয় জীবনানন্দ, কারো গিটারে ঝঙ্কার ওঠে ‘হানড্রেড মাইলস, হানড্রেড মাইলস অ্যাওয়ে’। কেউবা কল্পনায় আরেক কিশোরীর কথা ভেবে আনমনা হয়ে যায়। এরকম নিয়ম আর নিয়ম ভাঙার গল্প ‘খাকি চত্বরের খোয়ারি’।
বাংলা ভাষার অন্যতম মননশীল কথাসাহিত্যিক শাহাদুজ্জামান। গল্প আর উপন্যাসের জন্য সমধিক পরিচিত হলেও প্রবন্ধ, গবেষণা, ভ্রমণ এবং অনুবাদ সাহিত্যও তাঁর ঝরঝরে গদ্যে প্রাঞ্জল হয়ে ওঠে। ডাক্তারি পাশ করে উচ্চতর পড়াশোনা করেছেন গণস্বাস্থ্যে। এখন যুক্ত আছেন অধ্যাপনায়। লেখকের উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত কেটেছে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে। সেই ক্যাডেট জীবনের বিভিন্ন গল্প ও কথকতা আত্মজীবনীর ধাঁচে গল্প হয়ে উঠেছে ২০১৩ সালে প্রকাশিত এ বইয়ে।